নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২০৯তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৪৯ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ১২ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৩০৫ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৪৯ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১১ হাজার ১৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৩৯৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১১২ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১১ হাজার ৪২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৫০৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৭০ হাজার ২৫১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ৫০৯ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১১ হাজার ৪১০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৯৯টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ হাজার ১৭৬ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৪২০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২৪৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২১৫১ দশমিক ৩২ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৬৩৬ দশমিক শূন্য ৩ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩১ দশমিক ১৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায মৃত্যুবরণকারী ৩৩ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, আর নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ১০৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ২০১ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ; নারী ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৩ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন; যা শূন্য দশমিক ৪৫ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন; যা শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১২০ জন; যা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩০০ জন; যা ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৮০ জন; যা ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৪২৫ জন; যা ২৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৭১৪ জন; যা ৫১ দশমিক ১৬ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৬৬৩ জন; যা ৫০ দশমিক ২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৮৪ জন; যা ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৫৩ জন; যা ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৩৬ জন; যা ৮ দশমিক ২২ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৮ জন; যা ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৩১ জন; যা ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩৯ জন; যা ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১১ জন; যা ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭০১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৮টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৬৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৭০৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬৮৩টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮২ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৯টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬৮৭টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬৩৬ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ৫১টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৪ জন এবং খালি আছে ২৭০টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৯৮৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৩৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৫৪৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৭২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮০ জন, রংপুর বিভাগে ৪৬ জন, খুলনা বিভাগে ১২৭ জন, বরিশাল বিভাগে ২৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৯৩ জন, সিলেট বিভাগে ৪১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৬ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২১০ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৫৬৪ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৭০৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৭ হাজার ২০৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৪ হাজার ৫০৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬৯৯ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯১৩ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৯১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৯২ হাজার ১৭৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪২ হাজার ৯১৬ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪৫৯টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩৮ হাজার ৯৩৮টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৭৮টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫৭৫টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৩০৭টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ১০১ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ২১ হাজার ৬৯৯ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৮৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৯১ হাজার ৯৩১ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ লাখ ৭১ হাজার ৮১১ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৮৩ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪২ হাজার ২৮১ জন এবং এ পর্যন্ত ১০ লাখ ১০ হাজার ৬৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
মন্তব্য করুন