নিজস্ব প্রতিবেদক : বন্ধ প্রেক্ষাগৃহ চালু, সংস্কার ও নতুন প্রেক্ষাগৃহ তৈরির জন্য স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ দিতে ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।রোববার (০৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চলচ্চিত্র নির্মাতা, গবেষক ও প্রশিক্ষকদের সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি তথ্য জানান।
সেসময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি আগামী কয়েক বছর পর সিনেমা শিল্পে একটা বিরাট পরিবর্তন আসবে। প্রেক্ষাগৃহ সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা, বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রেক্ষাগৃহগুলো চালুর ব্যবস্থা করাসহ আরও অনেকগুলো নতুন প্রেক্ষাগৃহ গড়ে উঠবে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই বাংলাদেশে জাতীয় চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫৭ সালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই শিল্পের উন্নয়নের জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সরকারের পক্ষ থেকে বন্ধ প্রেক্ষাগৃহ চালু, সংস্কার ও নতুন প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করার জন্য স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে ১০০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, চলচ্চিত্র পৃথিবীর অনেক পুরনো একটি মাধ্যম। যে মাধ্যম জীবনের কথা, সমসাময়িক কালের কথা বলে। মানুষকে আনন্দ দেয়, সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরে, মানুষের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্রের অনেক কিছু চলচ্চিত্রের মাধ্যমে উঠে আসে। চলচ্চিত্র সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়। চলচ্চিত্রই সর্বোত্তম মাধ্যম যা মানুষকে হাসি, কান্না, বেদনা ও আনন্দ দেওয়ার মাধ্যমে সমাজকে পরিশুদ্ধ করে এবং সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশে সিনেমা ও টেলিভিশনের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে। এখানে এক ও দুই বছরের কোর্স করানো হয়। এছাড়া এখানে কিছু শর্ট কোর্সও করানো হয়। যারা টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত আছেন তারা কোর্সগুলো করতে পারেন।
তিনি বলেন, এই ইনস্টিটিউট থেকে যারা বিভিন্ন কোর্স সম্পন্ন করে বের হয়ে যাচ্ছে তারা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছেন। যারা এখানে কোর্স করে তাদের কিছু শর্টফিল্ম বানানোর জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়। এগুলো নির্মাণে সরকার ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দেয়। এখানকার অনেকের শর্টফিল্ম জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্যে এই প্রতিষ্ঠানকে একটি আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়া।
কবে থেকে প্রেক্ষাগৃহ খোলা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। করোনায় এখনও প্রতিদিন ৩০-এর কাছাকাছি মৃত্যু হচ্ছে, যদিও আগের স্বাভাবিক অবস্থার মত গণপরিবহন থেকে অফিস-আদালত চালু হয়েছে। এ বিষয়গুলো আরেকটু পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য তো প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ রাখা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং দূরত্ব বজায় রেখে, আসন সংখ্যা পুনর্বিন্যাস করে প্রেক্ষাগৃহ কবে চালু করা যায়, তা আমরা এ সপ্তাহের মধ্যে বা আগামী সপ্তাহের শুরুতে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।
’জিয়ার অপকর্ম ঢাকতেই বিএনপি’র মানববন্ধন’
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পুনর্বাসিত করেছেন, সেগুলো দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এগুলো যখন পত্রপত্রিকায় ছাপানো হচ্ছে, জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য আকারে গণমাধ্যম উপস্থাপন করছে তখন বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আওয়ামী লীগ আগে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে চায়-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গয়েশ্বর বাবু, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছে বিএনপি। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর, জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করার পর মুক্তিযুদ্ধের সব চেতনাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। যে চেতনার ভিত্তিতে দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই চেতনাকে ধ্বংস করেছেন তিনি।
অনেক অনলাইন পোর্টাল সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করছে, সেসব অনলাইনও নিবন্ধন পাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আলোচনা-সমালোচনা থাকবেই, সরকারের সমালোচনা করলে নিবন্ধন পাবে না, এটা নয়। দায়িত্বে থাকলে সমালোচনা হবে, সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা অপরাধ নয়। অনলাইন নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি সংস্থা যাচাই-বাছাই করছে। তিনটি সংস্থা থেকে যখন অনাপত্তি পাচ্ছি, নিবন্ধনের জন্য শুধু সেগুলোকে ছাড়পত্র দিচ্ছি।
মন্তব্য করুন