সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে আজকের মহাসমাবেশ থেকে ৯ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়েছে। এ দাবিগুলো মানা না হলে ঢাকা থেকে নোয়াখালী অভিমুখে লংমার্চ করা হবে। এ ছাড়া মহাসমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অপসারণ দাবিও করা হয়।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সমাবেশের সভাপতি ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। অনিক রায় বলেন, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আমাদের দাবি না মানলে আগামী ১৬ অক্টোবর ঢাকা থেকে নোয়াখালী লংমার্চ করা হবে।
মহাসমাবেশে বক্তারা বলেন, সারা দেশে ধর্ষণের মহামারি চলছে। ধর্ষণের ৯০ ভাগ ঘটনার সঙ্গে সরকারদলীয় সমর্থকরা জড়িত। এখন আমাদের এই আওয়ামী দুঃশাসনের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনে নারীদের পণ্য করার বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হবে। শুধুমাত্র আইন করে ধর্ষণ বন্ধ করা যাবে না। এজন্য সংস্কৃতির পরিবর্তনও করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, আগামী ১৬ ও ১৭ অক্টোবর আমাদের লংমার্চ ও প্রতিদিনের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে ছাত্রজনতার এগিয়ে আসতে হবে। ছাত্রজনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াই ছাড়া দাবি আদায় সম্ভব নয়।
১. সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ-নারীর প্রতি সহিংসতার সাথে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
২. পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সকল প্রকার যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।
৩. হাইকোর্টের নির্দেশনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডো সনদে বাংলাদেশকে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সকল আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে।
৪. ধর্মীয়সহ সকল ধরনের সভা-সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রেণে বিটিসিএলের কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে। সুস্থ্য ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
৫. তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ট্রাইবুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সকল মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে।
৭. ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫(৪) ধারাকে বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।
৮. পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোনো প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছেদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে।
৯. গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
মন্তব্য করুন